রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও তার দেশের জন্য আমাদের এতো আগ্রহ কেন?  

প্রকাশিত: ৩০ মে, ২০২৩ ০৩:১৭:১৪ || পরিবর্তিত: ৩০ মে, ২০২৩ ০৩:১৭:১৪

রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও তার দেশের জন্য আমাদের এতো আগ্রহ কেন?  

বর্তমান সময়ের শক্তিশালী মুসলিম দেশ তুর্কিয়ের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত ইস্তাম্বুলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান TASAM এর দাওয়াতে কয়েক বছর আগে একটি কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য প্রদান করেছিলেন।  ইবনে খালদুন ইউনিভার্সিটির (Ibn Haldun University) একজন শিক্ষক আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন "বর্তমান এরদোয়ান সরকার মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ববাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের স্বার্থে যদি বাংলাদেশী মানুষের সহযোগিতা চান তাহলে আপনার দেশের মানুষ সাহায্য করবে কিনা?" আমি উত্তরে এতোটুকুই বলেছিলাম, যদি মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ববাসীর কল্যাণে তিনি কাজ করেন তাহলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সেই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবে, তবে আমাদের দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত কি হবে তা বলা কঠিন। সম্প্রতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এবং আবার ক্ষমতার মসনদে বসায় বাংলাদেশের সাধারণমানুষ বেশ খুশী বলে মনে হচ্ছে।  সেক্ষেত্রে বলা যায় কয়েক বছর আগে আমার দেওয়া উত্তর ভুল ছিল না, আলহামদুলিল্লাহ। 

আগামীতে যদি মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের জন্য কল্যাণকর, স্বাধীন, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও সফল কূটনৈতিক কার্যক্রমের পদক্ষেপ নেয়, বিশেষ করে চীনের চির নির্যাতিত উইঘুর মুসলিম, বার্মার বর্বরতার শিকার রোহিঙ্গা মুসলিম, এবং স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনের জনতা ও সকল মুক্তিকামী জনতার পক্ষে।  তাহলে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মানুষ তার সাথে ও তার দেশের পাশে থাকবে, ইনশাল্লাহ।

উল্লেখ্য, ১৯২৪ সালে মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের ভূমিকা ও ১০০ বছর আগে তার সমাজ বিনির্মাণ এতটাই শক্তিশালি ছিল যে, এখনো এই দেশটিতে তার আদর্শের অন্ধ অনুসারী ব্যক্তির সংখ্যা ৪০℅ এর বেশী। তিনি হাজার বছরের উসমানিয়া খেলাফতের পতন ঘটিয়ে পশ্চিমা সভ্যতার উৎসাহে ও সহযোগিতায় একটি জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।  যা গত ১০০ বছরে ইউরোপীয় শক্তির অংশ হয়ে ওঠার চেষ্টাতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এরদোয়ানের গত ২০ বছরের প্রচেষ্টায় মহান আদর্শ ও নৈতিক শক্তির বলে বিশ্ব রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছে।  যা এরদোয়ানের অনেক সফলতার মধ্যে অন্যতম একটি সফলতা।  

এই দেশটি পশ্চিমা সভ্যতার ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম সভ্যতার মিলন স্থানে হওয়ায় সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। উসমানিয়া খেলাফতের গৌরবোজ্জল ইতিহাস আজও মুসলিম জাতি স্বর্ণ অক্ষরে রেখেছে ও স্মরণ করছে। আশা করা যায় গত একশত বছরের গ্লানির ইতিহাস মুছে, আগামীর মর্যাদার ও সম্মানের ইতিহাস সৃষ্টিতে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও তার দলের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্ব আবারো স্বমহিমায় জেগে উঠবে, বিশ্ববাসীর জন্য শান্তির বার্তা সর্বত্র পৌছে দিবে সেই প্রত্যাশা করছি।  মহান আল্লাহ সকলের কাজকে কবুল করুন, আমিন। 

লেখক: ড. একরাম উদ্দীন সুমন 
এডজানক্ট ফ্যাকাল্টি, নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।  

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ